১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল বাতিল করল বিডা
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) দেশের ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের পরিকল্পনা বাতিল করেছে। বিডার পরিচালনা পরিষদ এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। বাতিল হওয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে ৫টি সরকারি এবং ৫টি বেসরকারি রয়েছে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অর্থনৈতিক অঞ্চল (Economic Zone) বলতে একটি নির্দিষ্ট ভূমি অথবা স্তরকে বোঝানো হয়, যেখানে বিশেষ আর্থিক নীতি এবং বিধিমালা কার্যকর থাকে, সাধারণত সরকারের দ্বারা উন্নয়ন ও বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য। এই অঞ্চলে বিভিন্ন সুবিধা যেমন ট্যাক্স ছাড়, শুল্ক সুবিধা, এবং নিয়মের সহজীকরণ থাকে, যাতে ব্যবসায়ীরা এবং বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হন।
অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলি সাধারণত বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন:ফ্রি ট্রেড জোন (Free Trade Zones): যেখানে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে পণ্য নির্বাহী ও আমদানি করা যায়।
সোশ্যাল ইকোনমিক জোন (Social Economic Zones): যেখানে বিশেষ সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করা হয়।
নতুন শিল্পাঞ্চল (New Industrial Areas): যেখানে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলি স্থাপন করা হয়।
এই অঞ্চলগুলো প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্য হল স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা সৃষ্টি করা।
বাতিল হওয়া সরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে:
সোনাদিয়া ইকো ট্যুরিজম পার্ক (কক্সবাজার)
সুন্দরবন ট্যুরিজম পার্ক (বাগেরহাট)
গজারিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল (মুন্সীগঞ্জ)
শ্রীপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল (গাজীপুর)
ময়মনসিংহ অর্থনৈতিক অঞ্চল (ময়মনসিংহ)
এছাড়া, বাতিল হওয়া বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে:
বিজিএমইএ গার্মেন্টস শিল্প পার্ক (মুন্সীগঞ্জ)
ছাতক ইকোনমিক জোন (সুনামগঞ্জ)
ফমকম ইকোনমিক জোন (বাগেরহাট)
সিটি স্পেশাল ইকোনমিক জোন (ঢাকা)
সোনারগাঁও অর্থনৈতিক অঞ্চল (নারায়ণগঞ্জ)
বাতিলকৃত অঞ্চলগুলোর কারণ:
অবকাঠামোগত সমস্যা: অনেক অঞ্চলে অবকাঠামোগত উন্নয়ন যথাযথ নয়, যা বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে অক্ষম।
প্রায়োগিক ব্যবহার: কিছু অঞ্চলে জমি ব্যবহারের পরিকল্পনা অনুসরণ করা হয়নি।
বিনিয়োগের অভাব: যেসব অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি হয়নি, সেগুলো বাতিল করা হয়েছে।
প্রশাসনিক জটিলতা: প্রশাসনিক জটিলতার কারণে কিছু অঞ্চলের কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে শুরুর আগেই বাতিল করা হয়েছে।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা:
বিডা ভবিষ্যতে নতুন এবং কার্যকরী অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়েছে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য আকর্ষণীয় হবে এবং অবকাঠামো উন্নয়নের উদ্দেশ্যে যথাযথ পরিকল্পনা থাকবে।
অর্থনৈতিক অঞ্চলের গুরুত্ব:
অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এসব অঞ্চলে বিনিয়োগ শিল্পের বিকাশ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে।
সারসংক্ষেপ:
বিডার এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকার একটি পরিষ্কার সংকেত দিচ্ছে যে তারা উন্নত মানের এবং কার্যকরী অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করতে আগ্রহী।
0 comments:
Post a Comment