বিমসটেক সম্মেলনে ইউনূস ও মোদির বৈঠক: নতুন বার্তা
প্রতিবেদনটির কিছু মূল পয়েন্ট:
- ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবনতিগত আগস্টে শেখ হাসিনা ভারতের মাটিতে কম সময় কাটানোর পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। নতুন নেতৃত্বের মাল্টি-অ্যালায়েন্স নীতি ভারতকে নতুন পররাষ্ট্রনীতি সাজাতে বাধ্য করেছে।
- গঠনমূলক আলোচনা ও তীব্র বাক্যবিনিময়বৈঠককে "গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ" বলা হলেও, প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সম্মেলনে নেতাদের মধ্যে তীব্র আলোচনা হয়েছে।
- ব্যবস্হাপনা ও সম্পর্কের পুনর্মূল্যায়নযদিও এই বৈঠকটি কোনো বড় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে চিহ্নিত হয়নি, তবুও এটি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ পেযেছে।
এই বৈঠক ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উত্তেজনা প্রশমন করার একটি সুযোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতামত:
১. প্রিয়জিত দেবসরকার (লন্ডনভিত্তিক বিশ্লেষক)
তিনি বৈঠকটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন এবং বলেন,
"এই সংযোগ পারস্পরিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথ তৈরি করবে।"তিনি আরও উল্লেখ করেন যে,"ভারত ও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক এত গভীর যে সেগুলো বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব নয়। তাই উভয় পক্ষকে বাস্তববাদী হতে হবে।"
২. ইউনূসের চীন সফর ও ভারতের উদ্বেগ
ব্যাংককের বৈঠকের আগেই ইউনূস চীন সফরে গিয়ে চীনা বিনিয়োগকারীদের জানান,
"ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সাগরপথে পৌঁছানোর একমাত্র রাস্তা বাংলাদেশের মাধ্যমে যেতে হবে।"এই বক্তব্য ভারতের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
হর্ষ ভি পান্থ (কিংস কলেজ লন্ডন) বলেন,
"বাংলাদেশ এখন চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে—এমন ধারণা দিল্লিতে দৃঢ় হচ্ছে। তাই ভারতের মনে হচ্ছে, ঢাকা সব ডিম চীনের ঝুড়িতে রাখছে।"তিনি জানান, বৈঠক ছিল একে অপরকে বোঝার প্রচেষ্টা, তবে বড় সমঝোতার আশা করা উচিত নয়।
৩. শ্রীরাধা দত্ত (ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি)
তিনি মনে করেন, শেখ হাসিনার পতনের পর ভারতের সীমিত সংযুক্তির কৌশল একটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। তার মতে,
"বাংলাদেশে ইসলামীকরণ নিয়ে ভারতের মিডিয়া ও রাজনৈতিক মহল অযথা আতঙ্ক ছড়িয়েছে।"তিনি আরও বলেন,"মোদি-ইউনূস বৈঠক সৌজন্যপূর্ণ ছিল, কিন্তু এটিকে বড় অগ্রগতি বলে মনে করা ভুল হবে। ভারতকে নিশ্চিত করতে হবে যেন বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্তিমূলক, বহুদলীয় নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হয়—এই সংলাপ সে পথে সহায়ক হতে পারে।"
শেষ কথা
দ্য সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট এই বৈঠককে ঐতিহাসিক না বলে মনে করলেও, এর কৌশলগত গুরুত্বের দিকটি অস্বীকার করছে না। তারা বলছে, আঞ্চলিক জিওপলিটিক্সের পরিবর্তনের পটভূমিতে এটি এক নতুন উপলব্ধি ও রিসেটের মুহূর্ত।