সুস্থতা ও অসুস্থতা: ইসলামের দৃষ্টিতে রহমত, পরীক্ষা ও পাপ মোচনের উপায়

সুস্থতা নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাআলার এক বিরাট নেয়ামত। আর অসুস্থতা হতে পারে তাঁর পক্ষ থেকে একটি পরীক্ষা।
মানবজীবনে সুস্থতা ও অসুস্থতা—এই দুটোই অবিচ্ছেদ্য অংশ। অনেকেই ভুল করে মনে করেন, অসুস্থ হওয়া মানেই আল্লাহর অসন্তুষ্টি বা পাপের ফল। অথচ বাস্তবতা ভিন্ন। কোরআন ও হাদিস আমাদের জানান, আল্লাহ তাঁর প্রিয় নবীদেরও মাঝে মাঝে অসুস্থতা দিয়েছেন।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-ও অসুস্থ হয়েছেন এবং কষ্ট ভোগ করেছেন।
হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, “আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মতো এত বেশি রোগ-যন্ত্রণা ভোগকারী আর কাউকে দেখিনি।”
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৬৪৬)
রোগ-ব্যাধির মাধ্যমে গুনাহ মাফ হয়
আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় বান্দাদের দুনিয়ার কষ্টের মাধ্যমে পাপ থেকে মুক্ত করেন। শুধু শারীরিক অসুস্থতাই নয়—যেকোনো দুঃখ, কষ্ট, উদ্বেগ, মানসিক যন্ত্রণা—সবই পাপ মোচনের মাধ্যম হতে পারে।
রাসুল (সা.) বলেন, “একজন মুসলিমের ওপর যে কষ্ট, ক্লেশ, রোগ, দুশ্চিন্তা বা যন্ত্রণাই আসুক না কেন—even যদি তার গায়ে একটি কাঁটা ফুটে—সব কিছুর মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর গুনাহ মাফ করে দেন।”
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৬৪১)
বিপদে ভরসা রাখতে হবে আল্লাহর ওপর
পরীক্ষা জীবনের অংশ, এবং এই পরীক্ষাগুলো হয় মুমিনের ঈমানের শক্তি অনুযায়ী। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন:
“আমি তোমাদের অবশ্যই পরীক্ষা করব—ভয়, ক্ষুধা, সম্পদ ও জীবনের ক্ষয়ক্ষতি এবং ফল-ফসলের অভাব দিয়ে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।”
(সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫)
আর রাসুল (সা.) বলেন:
“আল্লাহ যাকে ভালোবাসেন, তাকেই তিনি দুঃখ-কষ্টে ফেলেন।”
(সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৬৪৫)
হতাশা নয়, বরং আস্থা ও দোয়ার মাধ্যমে এগিয়ে চলা
প্রত্যেক মুমিনের উচিত—কোনো দুঃখ, বিপদ বা রোগ-ব্যাধিতে হতাশ না হয়ে বরং আল্লাহর ওপর দৃঢ় আস্থা রাখা। তাঁর কাছেই সাহায্য চাওয়া এবং ধৈর্য অবলম্বন করা।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুস্থ রাখুন, আর যাঁরা অসুস্থ—তাঁদের দ্রুত আরোগ্য দান করুন। আমিন।