মডেল মেঘনা আলমের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া নিয়ে হাইকোর্টে রুল
মডেল মেঘনা আলমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার এবং তাকে আটক রাখার বৈধতা নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেছে। একইসঙ্গে আদালত জানতে চেয়েছে—ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে দেওয়া এই আটকাদেশ কেন আইনি কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না।
বুধবার রাতে গ্রেপ্তার এবং বৃহস্পতিবার রাতে ৩০ দিনের আটকাদেশপ্রাপ্ত মেঘনা আলমের বাবা দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদির হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
রুলে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে—ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেপ্তার, গ্রেপ্তারের কারণ না জানানো, ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে গোয়েন্দা হেফাজতে রাখা, আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ না দেওয়া এবং ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক দেওয়া আটকাদেশের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন। তিনি জানান, হাইকোর্ট গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া ও আটকাদেশ—এই দুটি বিষয়ের বৈধতা নিয়ে দুই সপ্তাহের জন্য রুল জারি করেছে।
এদিকে, মডেল মেঘনার গ্রেপ্তার ও আটক প্রক্রিয়া নিয়ে রাষ্ট্রের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, “গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে কিছু অভিযোগ থাকলেও, যেভাবে তাকে আটক করা হয়েছে তা সঠিক হয়নি।” তিনি আরও জানান, এই ঘটনার পর ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান রেজাউল করিম মল্লিককে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সচিবালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আসিফ নজরুল বলেন, “মডেল মেঘনার বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ রয়েছে, তবে গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া ঠিক ছিল না—সরকার সেটি স্বীকার করছে। এটি মানে এই নয় যে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। যদি অপরাধ থেকে থাকে, তবে যথাযথ প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে।”
ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয় থেকে শনিবার জারি করা এক আদেশে জানানো হয়েছে, রেজাউল করিম মল্লিককে ডিবি প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাতে ঢাকার নিজ বাসা থেকে মেঘনা আলমকে আটক করে ডিবি পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে তাকে আদালতে হাজির করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ চাওয়া হয়, যা আদালত মঞ্জুর করেন। তবে গ্রেপ্তারের সুনির্দিষ্ট কারণ জানানো হয়নি, যার ফলে বিষয়টি জনমনে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে।
0 comments:
Post a Comment