২৪ এপ্রিল - সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরায় অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের অধিনায়ক লে. কর্নেল জাহিদুল করিম জানিয়েছেন, পারভেজ হত্যার প্রধান আসামি মেহেরাজ মারামারির সময় ছুরিকাঘাত করে পারভেজকে হত্যা করেছেন, তবে তাঁর দাবি, এটি হত্যা উদ্দেশ্যে ছিল না।
মেহেরাজকে গাইবান্ধা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বলেন, বান্ধভী স্বাক্ষীর ফোনের কলের কারণে কয়েকজন বন্ধু নিয়ে ওইদিন পারভেজকে কিছু শিক্ষা দিতে যান, কিন্তু ঘটনাক্রমে মারামারির মধ্যে পারভেজের মৃত্যু ঘটে। হত্যা প্রত্যক্ষ করতে না চাইলে তিনি পুলিশকে এড়াতে গা ঢাকা দেন।
র্যাবের সহায়তায় ঘটনাটির সাথে জড়িত দুই ছাত্রীর পাশাপাশি অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। লে. কর্নেল জাহিদুল করিম বলেন, তাদের আটক করা গেলে হত্যার প্রকৃত কারণ সামনে আসতে পারে।
এদিকে, নিহত পারভেজের মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বনানী থানায় এই হত্যার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও বহিরাগতসহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, এবং অজ্ঞাত আরও ২০ থেকে ৩০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
এটি খুবই দুঃখজনক যে, নিহত পারভেজ একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন, এবং তার বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকায়। ঘটনার বিস্তারিত জানার জন্য তদন্ত চলছে, এবং আমাদের উচিত এই ঘটনায় ন্যায়বিচারের জন্য অপেক্ষা করা।
পারভেজ হত্যা: দুই ছাত্রী সাময়িক বহিষ্কার
জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যার ঘটনায় ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স দুই ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। একই সঙ্গে পারভেজের মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ক্যাপ্টেন মোবাশ্বের আলী খন্দকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, সোমবার (২১ এপ্রিল) দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের চিঠি ইস্যু করা হয়।
সাময়িকভাবে বহিষ্কার হওয়া দুই ছাত্রী হলেন: ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ফাতেমা তাহসিন ঐশী এবং ইংরেজি বিভাগের ফারিয়া হক টিনা।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই অবাঞ্ছিত ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সমন্বয়ে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দুই শিক্ষার্থীর সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত পাওয়া যায়, যা তাঁদের সাময়িক বহিষ্কারের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পারভেজের পরিবার এবং বন্ধুদের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে গভীর সমবেদনা জানানো হয়েছে।
পারভেজ হত্যা: কীভাবে ঘটেছিল ঘটনাটি?
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি মর্মান্তিক ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ প্রাইমএশিয়া গলিতে চা ও সিঙ্গাড়া খেতে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি তিনজন ছাত্রীকে দেখার পর তাঁদের দিকে কিছু হাস্যরসাত্মক মন্তব্য করেন, যা ছাত্রীরা ভিন্নভাবে নিয়েছিলেন। তাঁরা পরে তাঁদের বন্ধুদের ফোন করেন, ফলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এর পর উভয় পক্ষকে ডেকে এনে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন। তবে ঘটনাটি এখানেই শেষ হয়নি। মাহাথি, মেহেরাব এবং আবুজর গিফারী নামের তিনজন স্থানীয় ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে পারভেজের ওপর হামলা চালান।
যখন পারভেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটের দিকে পালানোর চেষ্টা করেন, হামলাকারীরা তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকে এবং পিঠে আঘাত করে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গভীর শোক অনুভব করছে এবং এটি শিক্ষার্থী নিরাপত্তার একটি গুরুতর উদ্বেগ হিসেবে দেখা দিচ্ছে।
বর্তমান তদন্ত কার্যক্রমের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তির দাবি উঠেছে। আমরা পারভেজের পরিবার এবং বন্ধুদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই এবং ঘটনার সঠিক বিচার প্রার্থনা করি।