জীবনে আমাদের শখ বা আহ্লাদ পূরণের জন্য নির্দিষ্ট একটি সময় থাকে। সঠিক সময়টি একবার পেরিয়ে গেলে সেই শখ পূর্ণ হলেও, তৃপ্তি নাও পাওয়া যেতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, ১৭ বছর বয়সে যে বিরিয়ানিটি অমৃতের মতো লাগে, ৩২ বছর বয়সে হয়তো তা তেমন ভালো লাগবে না। ১৮ বছর বয়সে সমবয়সী কারও সঙ্গে পাঞ্জাবি বা শাড়ি পরে রিকশায় ঘুরে বেড়ানো অনেক রোমান্টিক মনে হয়, কিন্তু ৩৬ বছরে এসে একই কাজ করতে গিয়ে সেই রোমান্সের অনুভূতি আর পাওয়া যায়নি।
১৯ বছর বয়সে বন্ধুদের সঙ্গে সমুদ্র সৈকতে বেড়ানো যে আনন্দ দেয়, ৪০ পরে সেই আনন্দে ফিকে হয়ে যেতে পারে। একদিন নিজের ছাদে বাগান করার স্বপ্ন দেখে যে মানুষটি বারান্দার টবে গোলাপের চারা লাগায় না, ছাদ তৈরি হওয়ার পর সে দেখবে যে বাগান করার সময় নেই।
প্রথমেই চাকরি করে বাবা-মাকে দামী জিনিস কিনে দেওয়ার স্বপ্ন দেখা মানুষটি চাকরি করে ঠিকই টাকা কামাবে, কিন্তু ততদিনে মা-বাবা এই দুনিয়াতে থাকতেও নাও পারেন।
জীবনের এ ছোট খাটো সাধ আহ্লাদগুলোর গুরুত্ব খুবই বেশি। এগুলো একটি মানুষের হৃদয়কে জীবন্ত, সতেজ ও প্রাণবন্ত রাখতে সাহায্য করে। ইচ্ছা পূরণের অভাব আমাদের হৃদয়কে ধীরে ধীরে নিঃশেষ করে দেয়। এজন্য সময় থাকতে আমাদের শখ পূরণ করা উচিত।
অনেক টাকা জমালে একদিন খাব বলার পরিবর্তে, অল্প কিছু টাকা নিয়ে আজই সেই পছন্দের কাচ্চিটি খেয়ে আসুন। আপনি জীবনসেরা স্বাদ পাবেন।
গুলামতম পছন্দের মানুষটিকে রিকশা ডেটের প্রস্তাব দিন। যদি তিনি রাজি হন, তাহলে শাড়ি বা পাঞ্জাবি পরে হুড খোলা রিকশায় বৃষ্টিতে ভিজে শহরময় ঘুরে বেড়ান। এটি আপনার জীবনের শ্রেষ্ঠ রোমান্স হতে পারে।
যখন পকেটে কিছু টাকা হয়, তখন বন্ধুর কাঁধে হাত রেখে বলুন, “চলো, সাজেক যাব।” আজকেই যাব, এক্ষণি যাব। ব্যাগ গুছিয়ে বাস ধরতে হবে।
নিজের ছাদে বাগান হবে বলার বদলে, ভাড়া বাসার বারান্দায় পছন্দের গোলাপের চারাটি লাগান। বাবার জন্য বা মায়ের জন্য কম দামে কিনে ফেলুন শার্ট বা শাড়ি; সুতি হলেও সমস্যা নেই, শখ পূরণই বড় কথা!
মনে রাখবেন, একদিন সব হবে ভেবে যিনি নিজেকে বঞ্চিত করেন, তাঁর জীবনে কিছুই হয় না। তাঁর জীবন কাটে বিষণ্নতা ও অপেক্ষায়, আর শেষ হয় আফসোস ও হতাশার মধ্যে।
0 comments:
Post a Comment