সাভার থানার ওসি জুয়েল বলেছেন, "ডাকাতির ঘটনা নতুন নয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে এমন ঘটনা ঘটে। আমরা অপরাধ দমনে চেষ্টা করছি।"
সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গত ৪০ দিনে ৫টি বাস ডাকাতির শিকার হয়েছে। আজ (১১ এপ্রিল) সকালে ৩০ মিনিটের মধ্যে একসঙ্গে দুটি চলন্ত বাসে ছুরি দেখিয়ে ডাকাতি হয়েছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে।
প্রথম ডাকাতির ঘটনা ঘটে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে, যখন নবীনগরগামী রাজধানী পরিবহনের একটি বাস সি অ্যান্ড বি এলাকায় ছিল। বাসের এক যাত্রী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস, বলেন, "আমি সকালে রেডিও কলোনি এলাকা থেকে বাসে উঠি।
বাসটি সিএন্ডবি ব্রিজের কাছে পৌঁছানোর আগেই তিনজন ছিনতাইকারী চাকু হাতে ড্রাইভারকে বাস থামাতে বলে। তারপর তারা যাত্রীদের অস্ত্রের মুখে নিয়ে নগদ টাকা ও গয়না ছিনিয়ে নেয়।"
তিনি মনে করছেন, ডাকাতরা ব্যাংক টাউন এবং পুলিশ টাউন এলাকার মাঝে একটি ব্রিজে বাসটি থামিয়ে সেখান থেকে নেমে যায়।
এ মাসের ৪ তারিখেও ব্যাংক টাউন ব্রিজের কাছে ইতিহাস পরিবহনের একটি বাসে একই ধরনের ডাকাতি হয়েছে। সশস্ত্র ডাকাতরা যাত্রীদের থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন এবং সোনার গয়না লুট করে ফুলবাড়িয়া এলাকায় পালিয়ে যায়। ডাকাতির পর বাসের ড্রাইভার ও সহকারীও পালিয়ে যায়।
বাসের যাত্রী রিপন সরকার জানান, তিনি চন্দ্রা থেকে ঢাকাগামী ইতিহাস পরিবহনের বাসে দুপুর ২টার দিকে উঠেছিলেন। তিনি বলেন, "পথে তিনজন লোক বাসে উঠে ছুরির মুখে যাত্রীদের চুপ থাকতে বলে। তারা যাত্রীদের সোনার গয়না, টাকা এবং মোবাইল লুট করে পালিয়ে যায়।"
সাভার থানার ওসি জুয়েল জানিয়েছেন, এ ঘটনার পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
এর আগে, ২৫ মার্চ রেডিও কলোনি এলাকায় শুভযাত্রা পরিবহনের একটি বাসে একই ধরনের ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তার আগে, ২ মার্চ ব্যাংক টাউন ব্রিজের কাছে রাজধানী পরিবহনের একটি বাসে যাত্রীদের কাছ থেকে লুটপাট করা হয়।
একই এলাকায় বারবার ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখে প্রশ্ন উঠছে—ব্যাংক টাউন ব্রিজ কি বাস ডাকাতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে? অথচ, এই ব্রিজের অদূরে একটি পুলিশ চেকপোস্ট রয়েছে।
ডাকাতির ঘটনা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণে জানতে চাইলে সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুয়েল বলেন, "ডাকাতির ঘটনা নতুন নয়। দেশে বিভিন্ন স্থানে এমন ঘটনা ঘটে। আমরা অপরাধ দমনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।"
এ বিষয়ে সাভার থানার পরিদর্শক মো. আশিক জানান, "৪ এপ্রিলের ঘটনায় বাসের ড্রাইভার ও হেল্পারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজকের ঘটনার জন্য লুট হওয়া বাসের চালক ও সহকারীকে খোঁজা হচ্ছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে ব্যাংক টাউন বাস স্ট্যান্ড সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়া যাবে।"
স্থানীয় বাসিন্দা ও যাত্রীদের দাবি, পুলিশ চেকপোস্ট থাকার পরেও বারবার ডাকাতির ঘটনা ঘটায় তাদের সন্দেহ হচ্ছে যে পুলিশ যথেষ্ট তৎপর নয়। তারা এ রুটে পুলিশি নজরদারি ও টহল বাড়ানোর দাবি করছেন। তাদের মতে, শুধু বাসের চালক বা হেল্পারকে নয়, ডাকাতদের পুরো চক্রকে গ্রেপ্তার করতে হবে।
সাভার পুলিশ জানিয়েছে, তারা এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু স্থানীয়দের প্রশ্ন—এই প্রতিশ্রুতি কতটা কার্যকর হবে?
0 comments:
Post a Comment