🌟 মানুষের মধ্যে কে সর্বোত্তম? — একটি হাদীসের আলোকে পর্যালোচনা

ভূমিকা
ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। এটি শুধুমাত্র ইবাদতের নির্দেশ দেয় না বরং মানুষের প্রতি দায়িত্বশীলতা, ন্যায়, কল্যাণ ও পরহেজগারির শিক্ষা দেয়। একটি প্রাসঙ্গিক হাদীস এই বিষয়ে আমাদের স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেয়।
হাদীসের বর্ণনা
আরবি পাঠ:
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّ رَجُلًا قَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَيُّ النَّاسِ أَفْضَلُ؟
فَقَالَ: "مُؤْمِنٌ يُجَاهِدُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ".
قَالُوا: ثُمَّ مَنْ؟
قَالَ: "ثُمَّ مُؤْمِنٌ فِي شِعْبٍ مِنَ الشِّعَابِ، يَتَّقِي اللَّهَ، وَيَذَرُ النَّاسَ مِنْ شَرِّهِ".
সূত্র: সহীহ বুখারী, হাদীস: ২৭৮৬
বাংলা অনুবাদ:
আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) বলেন,
এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন:
“হে আল্লাহর রাসূল! মানুষের মধ্যে কে সর্বোত্তম?”
তিনি বললেন: “সেই মুমিন ব্যক্তি, যে আল্লাহর রাস্তায় নিজের জীবন ও সম্পদ দিয়ে সংগ্রাম করে।”
লোকেরা বলল: “এরপর কে?”
তিনি বললেন: “যে ব্যক্তি কোনো নির্জন স্থানে ইবাদতে মগ্ন থাকে, আল্লাহকে ভয় করে, এবং মানুষকে তার অনিষ্ট থেকে নিরাপদ রাখে।”
মূল শিক্ষা ও ব্যাখ্যা
১. জীবন ও সম্পদ দিয়ে আল্লাহর পথে সংগ্রাম
এই শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী ব্যক্তি সমাজের কল্যাণে কাজ করেন, দ্বীনের প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন, এবং নিজের সামর্থ্য দিয়ে ইসলাম প্রচারে ভূমিকা রাখেন।
২. নির্জনে আল্লাহর ইবাদতে নিবিষ্ট থাকা
যিনি নিজেকে গোনাহ থেকে রক্ষা করেন, অন্যকে ক্ষতি করেন না এবং আল্লাহকে ভয় করে নির্জনে ইবাদতে লিপ্ত থাকেন — তিনিও আল্লাহর নিকট প্রিয় ও উত্তম মানুষদের অন্তর্ভুক্ত।
ইসলামের ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি
সক্রিয়তা | নির্জনতা |
---|---|
সমাজে কাজ, দাওয়াহ, জিহাদ | আত্মশুদ্ধি, পরহেজগারি |
উম্মাহর সেবা | নিজেকে অনিষ্ট থেকে রক্ষা |
উপসংহার
উত্তম মানুষ হওয়ার জন্য শুধু বাহ্যিক কর্ম নয়, বরং নিয়ত, আন্তরিকতা ও মানুষের প্রতি সদাচরণ অপরিহার্য। রাসূল (সা.) এমন দু’ধরনের মানুষের কথা বলেছেন, যারা আল্লাহর নিকট সর্বোত্তম: এক. সক্রিয়ভাবে দ্বীনের জন্য কাজ করা মুমিন, দুই. নির্জনে আল্লাহকে ভয় করে ইবাদতে মগ্ন থাকা ও কারো অনিষ্ট না করা মুমিন।
📚 উৎস
- সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৭৮৬
- রিয়াদুস সালিহীন, ইমাম নববী
- তাফসীর ইবনে কাসীর