গুঁড়া দুধ দীর্ঘদিন ধরে তরল দুধের একটি সহজ ও টেকসই বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, বিশেষ করে যখন তরল দুধ সহজলভ্য নয়। তবে নতুন বাবা-মায়ের মধ্যে একটি সাধারণ সন্দেহ থাকে—এই গুঁড়া দুধ কি শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য পুরোপুরি নিরাপদ?
গুঁড়া দুধের উৎপাদন প্রক্রিয়া
গুঁড়া দুধ মূলত তরল দুধ থেকে তৈরি, যেখানে দুধের জলীয় অংশ অপসারণ করা হয়। এটি সাধারণত ফুলফ্যাট এবং স্কিম দু ধরনের হয়। বিভিন্ন কারণে, ব尤其করে যেসব জায়গায় তরল দুধ সংরক্ষণ করা কঠিন, সেখানে গুঁড়া দুধ খুবই জনপ্রিয়।
গুঁড়া দুধের সুবিধা ও সীমাবদ্ধতাশিশুর পুষ্টি ও নিরাপত্তার দিক থেকে গুঁড়া দুধ ব্যবহারের কিছু সুবিধা এবং সীমাবদ্ধতা রয়েছে:
১. ব্যাকটেরিয়ার ঝুঁকি
গুঁড়া দুধ যদি যথাযথভাবে সংরক্ষণ না করা হয়, তবে এতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ঝুঁকি থাকতে পারে। যদিও এটি খুবই বিরল, তবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল শিশুদের জন্য এটি বিপজ্জনক হতে পারে। তাই গুঁড়া দুধকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা এবং ফুটানো বিশুদ্ধ পানি দিয়ে তৈরিকৃত করা উচিত।
২. দূষণকারী উপাদানের উপস্থিতি
কিছু গুঁড়া দুধে ভারী ধাতু, কীটনাশক এবং হরমোনজাত উপাদান থাকতে পারে। উৎপাদন এবং প্রক্রিয়াকরণ সময় এসব উপাদান দুধে মিশতে পারে। তাই বিশ্বস্ত ব্র্যান্ডের গুঁড়া দুধ নির্বাচন করা নিরাপদ।
৩. অতিরিক্ত চিনি
অনেক বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুত গুঁড়া দুধে অতিরিক্ত চিনি ও সংরক্ষণকারী উপাদান থাকতে পারে। এগুলো শিশুর দাঁতের ক্ষতি, ওজন বৃদ্ধি, এবং ভবিষ্যতে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই শিশুর জন্য গুঁড়া দুধ কেনার সময় লেবেল ভালোভাবে দেখে নেওয়াও উচিত—বিশেষ করে চিনির পরিমাণে।
৪. ভারসাম্যহীন পুষ্টি
গুঁড়া দুধ পুষ্টিকর হলেও, এটি তাজা দুধের সম্পূর্ণ বিকল্প নয়। এতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইনগ্রেডিয়েন্ট কম থাকে, যেমন প্রাকৃতিক ফ্যাট অ্যাসিড। তাই গুঁড়া দুধকে শিশুর খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সময় তা যেন একমাত্র উৎস না হয়—সুষম খাদ্যের সঙ্গেও ভারসাম্য রাখা জরুরি।
৫. ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু শিশুর ক্ষেত্রে সমস্যা
গুঁড়া দুধে ল্যাকটোজ রয়েছে, তাই যেসব শিশুর ল্যাকটোজ সহ্য করার সামর্থ্য নেই, তাদের জন্য এটি সমস্যা তৈরি করতে পারে, যার ফলে পেট ফাঁপা, ব্যথা এবং ডায়রিয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এই ক্ষেত্রে ল্যাকটোজ-ফ্রি গুঁড়া দুধ অথবা সয়া, বাদামজাতীয় দুধের বিকল্প ব্যবহার করা যেতে পারে।
উপসংহারগুঁড়া দুধ শিশুর জন্য পুরোপুরি ক্ষতিকর নয়, তবে কিছু সতর্কতা মেনে চলা প্রয়োজন। সঠিক ব্র্যান্ডের নির্বাচন, সঠিকভাবে প্রস্তুত করা এবং শিশুদের ব্যক্তিগত পুষ্টির চাহিদা বুঝে ব্যবহার করলে এটি একটি কার্যকর বিকল্প হতে পারে।
আপনার যদি এ বিষয়ে আরও প্রশ্ন থাকে, দয়া করে জানাবেন!
0 comments:
Post a Comment