Monday, April 21, 2025

চট্টগ্রামে দিনভর উত্তেজনা: শিক্ষার্থী, ছাত্রদল ও এনসিপির মধ্যে সংঘর্ষে আহত ৪

চট্টগ্রামে দিনভর উত্তেজনা: শিক্ষার্থী, ছাত্রদল ও এনসিপির মধ্যে সংঘর্ষে আহত ৪

চট্টগ্রাম নগরীর উত্তর কাট্টলীর আলহাজ মোস্তফা হাকিম ডিগ্রি কলেজে দিনভর উত্তেজনার মধ্য দিয়ে ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীদের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) এই ঘটনায় অন্তত চারজন আহত হন। আহতরা হলেন ছাত্রঅধিকার পরিষদের মো. মারুফ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্যসচিব মোহাম্মদ মীর, কর্মী মো. সজীব এবং ছাত্রদলের রায়াদ হাসান।

সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় এক নারী শিক্ষককে কলেজে না আসতে বলার প্রতিবাদ ও কলেজ পরিচালনা কমিটিতে বিএনপি নেতার আত্মীয়কে যুক্ত করার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ থেকে। সকাল থেকেই উত্তেজনা বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হলেও সংঘর্ষ থামেনি, বরং কলেজের বৈঠক কক্ষে গড়ায় হাতাহাতি।

বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা আকবরশাহ থানা ঘেরাও করে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। এর কিছু সময় পর ছাত্রদল ও বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী থানার সামনে অবস্থান নেয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য ও বিএনপি নেতা মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দিন এক নারী শিক্ষককে মৌখিকভাবে ক্লাস না নেওয়ার নির্দেশ দেন। এতে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে প্রতিবাদ শুরু করে।

অভিযোগ উঠেছে, বিএনপি নেতা মনজুরুল আলম মঞ্জুর চাচা মাইনু চৌধুরীকে কলেজ কমিটিতে জোরপূর্বক অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা হামলা চালায় বলে দাবি করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব নিজাম উদ্দিন বলেন, কলেজে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলেও ছাত্রদল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের নামে রাজনীতি শুরু করে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে তারা। পরে থানায় অভিযোগ দিতে গেলে সেখানে আরেকজনকে মারধর করা হয়। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আন্দোলনে ফেরার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

অন্যদিকে, ছাত্রদলের আকবরশাহ থানা শাখার সদস্য ফাহিম আহমেদ বলেন, "আমরা কেবল পরিচালনা কমিটির সদস্যদের ফুল দিতে গিয়েছিলাম। শিক্ষার্থীরা আমাদের ওপর পানি ছুঁড়ে মারে, কিন্তু হামলা হয়নি।"

কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য ও বিএনপি নেতা মাইনুদ্দীন চৌধুরী জানান, শিক্ষকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা ছাত্রদলের এক কর্মীকে মারধর করলে পরবর্তীতে পাল্টা হামলা হয়।

আকবরশাহ থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, "এক সদস্যকে নিয়ে এক শিক্ষকের মন্তব্য কেন্দ্র করে বিরোধ তৈরি হয়। পরে দুইপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা হয়। আমরা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে মামলা নেওয়া হবে।"

শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে আকবরশাহ থানায় এক বৈঠকে পরিস্থিতি শান্ত করতে সমঝোতায় পৌঁছায় সবপক্ষ। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নগর পুলিশের পশ্চিম জোনের ডিসি হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়া, সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি, বিএনপি, ছাত্রদল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির নেতারা।

0 comments:

Popular News

Categories

accident (5) actor (1) agriculture (6) bangladesh (50) bd model (1) BDR (1) business (12) campus (1) crime (18) drama (5) Economy (5) education (14) entertainment (12) environment (17) gardening (9) gaza (1) goat (1) hadees (7) health (37) heath (1) holiday (1) hsc (1) india (6) inspiration (1) international (42) ipl (3) italy (1) jobs (6) life style (8) media (4) movie (7) national (3) newzealand (1) online job (1) pakistan (4) pets (1) politics (15) quran (2) qurbani (3) railway (1) red carpet (3) religion (6) science news (3) sports (32) story (4) suicide (1) technology (14) tours and travels (1) weather (7)