Monday, April 14, 2025

যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের ঘটনায় হিড়িক

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের হিড়িক


যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনা করা বেশ কিছু বিদেশি শিক্ষার্থী ও সদ্য স্নাতকের ভিসা হঠাৎ করে বাতিল করা হয়েছে— বিষয়টি ঘিরে তৈরি হয়েছে ব্যাপক উদ্বেগ ও আলোচনা। হার্ভার্ড, স্ট্যানফোর্ড, টাফ্টসসহ বহু প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্তের শিকার হচ্ছেন।


বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফেডারেল অভিবাসন রেকর্ড হালনাগাদ হওয়ার পরেই তারা জানতে পারছেন কারা ভিসা বাতিলের তালিকায় পড়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্প প্রশাসনের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর কড়াকড়ি নজরদারির অংশ হিসেবেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। গত মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, এমন ভিসা বাতিলের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৩০০ ছাড়িয়ে গেছে।


আইনি বিশেষজ্ঞদের প্রতিক্রিয়া

আমেরিকান ইমিগ্রেশন লয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের শেভ দালাল-ধেইনি জানিয়েছেন, “ঘটনার পরিধি ও প্রকৃতি বোঝার জন্য তথ্য সংগ্রহ করছি। এমন সুসংগঠিত পদক্ষেপ অতীতে দেখা যায়নি।”


ভিসা বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্যতম হলেন:


রুমেইসা ওজতুর্ক, তুরস্কের পিএইচডি শিক্ষার্থী (টাফ্টস ইউনিভার্সিটি), যাকে সম্প্রতি রাস্তা থেকে আটক করা হয়।


মাহমুদ খলিল, কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির সদ্য স্নাতক, যিনি ফিলিস্তিন সমর্থনে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় ভিসা হারান।


দুজনকেই বর্তমানে অভিবাসন হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।


ভিসা বাতিলের ব্যাপ্তি ও প্রতিক্রিয়া

লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়ার ইউসিএলএ, ইউসি বার্কলে, ইউসি ডেভিস, ইউসি সান দিয়েগো, ইউসি সান্তা ক্রুজ ও স্ট্যানফোর্ডের একাধিক শিক্ষার্থী এই সিদ্ধান্তের শিকার হয়েছেন। এর প্রতিবাদে অন্তত দুই শিক্ষার্থী ফেডারেল আদালতে মামলা করেছেন, যাদের দাবি, যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই তাদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে।


বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিবৃতি অনুযায়ী:


স্ট্যানফোর্ড জানিয়েছে, তাদের ছয় শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়েছে।

হার্ভার্ড নিশ্চিত করেছে, তিন বর্তমান শিক্ষার্থী ও দুই সদ্য স্নাতকের ভিসা বাতিল হয়েছে।

একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে ডার্টমাউথ, মিনেসোটা স্টেট, অ্যারিজোনা স্টেট ও ইউনিভার্সিটি অব অরেগন-এও।

তবে স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

বাকস্বাধীনতা ও নজরদারির প্রশ্ন

গত ৫ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে অনুষ্ঠিত ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে ভিসা বাতিলের বিষয়টি আলোচনায় আসে। বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, ওজতুর্ক ও খলিলের ঘটনা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের উপর নজরদারি ও ক্যাম্পাসে মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের উদাহরণ।

উপসংহার

বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের এই ঢেউ শুধুই প্রশাসনিক পদক্ষেপ, নাকি এর পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক বা আদর্শিক উদ্দেশ্য— সে প্রশ্ন এখন উঠছে শিক্ষাঙ্গন থেকে রাজনীতিক মহল পর্যন্ত। পরিস্থিতি দ্রুত সমাধান না হলে, এটি যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার পরিবেশ ও বৈচিত্র্যপূর্ণ ক্যাম্পাস সংস্কৃতির ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।

0 comments:

Popular News

Categories

accident (5) actor (1) agriculture (6) bangladesh (50) bd model (1) BDR (1) business (12) campus (1) crime (18) drama (5) Economy (5) education (14) entertainment (12) environment (17) gardening (9) gaza (1) goat (1) hadees (7) health (37) heath (1) holiday (1) hsc (1) india (6) inspiration (1) international (42) ipl (3) italy (1) jobs (6) life style (8) media (4) movie (7) national (3) newzealand (1) online job (1) pakistan (4) pets (1) politics (15) quran (2) qurbani (3) railway (1) red carpet (3) religion (6) science news (3) sports (32) story (4) suicide (1) technology (14) tours and travels (1) weather (7)