গরমকালে ডায়াবেটিকদের কী শরবত খাওয়া নিরাপদ? আর কোনগুলো একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত?
গরমে ঠান্ডা শরবতের স্বাদই আলাদা! তবে ডায়াবেটিসের রোগীদের শরবত খাওয়ার আগে বেশ কিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখা জরুরি—যেমন, শরবতের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (GI) ও গ্লাইসেমিক লোড (GL) কেমন, কখন এবং কতটা পরিমাণে খাওয়া হচ্ছে ইত্যাদি।
রাস্তায় যেমন নানা রকমের নরম পানীয়, লেবুর শরবত, ডাবের জল, আমপান্না ইত্যাদি মেলে, তেমনই অনেকে নিজেরাও বাড়ি থেকে ফলের রস বা গ্লুকোজের বোতল সঙ্গে আনেন। তবে ডায়াবেটিক বা ওজন নিয়ন্ত্রণে আগ্রহীদের কী ধরনের শরবত খাওয়া নিরাপদ? আসুন দেখে নেওয়া যাক।
✅ ডায়াবেটিকদের জন্য উপযোগী শরবত
১। ডাবের জল (নারকেলের জল)
গরমে হাইড্রেট থাকার জন্য ডাবের জল চমৎকার। এতে স্বাভাবিকভাবেই চিনি কম এবং পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টস বেশি। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মাঝারি, তাই পরিমিত পরিমাণে খেলে রক্তে শর্করার উপর তেমন প্রভাব পড়ে না।
কতটা খাবেন: দিনে ১০০–১৫০ মিলিলিটার (আধ থেকে পৌনে এক গ্লাস)
কখন খাবেন: সকাল ১০টা–১২টার মধ্যে অথবা হালকা ব্যায়ামের পর
মনে রাখবেন: অতিরিক্ত চিনি বা নুন যোগ করা চলবে না।
২। শসা-পুদিনার শরবত
কখন খাবেন: দুপুরে বা দু’টি খাবারের মাঝামাঝি সময়ে
মনে রাখবেন: চিনি বা নুন একদম নয়।
৩। টম্যাটোর রস
টম্যাটোতে লাইকোপেন জাতীয় অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে এবং চিনি খুব কম। গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও কম। শুধু টম্যাটো ব্লেন্ড করে তাতে সামান্য গোলমরিচ ও লেবুর রস মিশিয়ে নিন। রস ছেঁকে খাওয়ার দরকার নেই।
কতটা খাবেন: দিনে ১৫০ মিলিলিটার
কখন খাবেন: দুপুরে বা লাঞ্চের আগে
৪। আমপোড়ার শরবত
পোড়া কাঁচা আম দিয়ে বানানো এই শরবতের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। ডায়াবেটিকরাও খেতে পারেন। তবে চিনি বা অতিরিক্ত নুন না দিয়ে বানাতে হবে।
কতটা খাবেন: দিনে ১৫০–২০০ মিলিলিটার
কখন খাবেন: দুপুরে বা দুপুরের খাবারের আগে
❌ কোন ফলের রস খাবেন না?
আম, কাঁঠাল, লিচু, আঙুর ইত্যাদি খুব মিষ্টি ফলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেক বেশি। এদের রস খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বেড়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে রসে ফাইবার না থাকায় ক্ষতি আরও বাড়ে।
তবে মাঝে মাঝে তরমুজ বা বেদানার রস সামান্য পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে—সপ্তাহে ২–৩ বার, তাও অবশ্যই প্রোটিন ও ফাইবারযুক্ত খাবারের পরে। যদি সম্ভব হয়, রস না ছেঁকে, শাঁসসহ খাওয়াই ভালো।
ডায়াবেটিকদের শরবত খাওয়ার সময় কেবল স্বাদ নয়, খেয়াল রাখতে হবে পুষ্টিগুণ ও পরিমাণের দিকেও। প্রাকৃতিকভাবে কম চিনি আছে এমন উপাদান বেছে নিয়ে শরবত তৈরি করলে গরমেও মন ভরে, শরীরও সুরক্ষিত থাকে।
0 comments:
Post a Comment