ইন্দোনেশিয়ার অনুকরণীয় কোরবানি সংস্কৃতি: ধর্ম থেকে সমাজকল্যাণের পথে
অনলাইন ডেস্ক | ০৬ জুন, ২০২৫
বিশ্বে আয়তনে সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়া। মুসলমানদের সংখ্যার দিক থেকেও দেশটি শীর্ষে অবস্থান করছে। শুধু জনসংখ্যা বা আয়তন নয়, ঈদুল আজহার মূলে থাকা কোরবানি আদায়ের পদ্ধতিতেও এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে দেশটি।

ইন্দোনেশিয়ায় কোরবানি শুধু একটি ধর্মীয় অনুশীলন নয়, বরং এটি একটি সামাজিক উদ্যোগে রূপ নিয়েছে। ঈদুল আজহার সময় সামর্থ্যবান মুসলিমরা হাট থেকে গরু, ছাগল বা ভেড়া কিনে তা মসজিদে দিয়ে আসেন। অনেক মসজিদে ৮-১০টি পর্যন্ত কোরবানির পশু আসে। এরপর শুরু হয় সুশৃঙ্খল কোরবানির প্রক্রিয়া।
প্রতিটি মসজিদ এলাকায় কতগুলো পরিবার রয়েছে—তার পূর্ণ হিসাব থাকে স্থানীয় ইমামের কাছে। সেই হিসাব অনুযায়ী কোরবানির মাংস ভাগ করা হয়। পশু জবাই শেষে স্বেচ্ছাসেবকরা দলবদ্ধভাবে গোশত কেটে ছোট ছোট প্যাকেটে ভাগ করেন এবং সেগুলো পৌঁছে দেন প্রতিটি পরিবারে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে ইন্দোনেশিয়ায় তিন দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়। ঈদের দিন সকালে মুসল্লিরা নতুন জামা পরে ঈদগাহ বা মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করেন। খুতবা শোনার পর শুরু হয় পশু কোরবানির আনুষ্ঠানিকতা।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে কোরবানি উৎসব শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুভূতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং এটি একটি সামাজিক একতা, সহানুভূতি ও সমবায় চেতনার প্রতীক হয়ে উঠেছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশটিতে প্রতিবছর কোরবানির সময় গড়ে ১০ মিলিয়নের বেশি পশু কোরবানি দেওয়া হয়।
ইন্দোনেশিয়ার জাভা, সুমাত্রা, বালির মতো দ্বীপগুলোতে স্থানীয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে কোরবানির পশু পরিবহন ও বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। রাজধানী জাকার্তা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত প্রতিটি জায়গায় ঈদুল আজহার এই সামাজিক সংস্কৃতি একইভাবে পালিত হয়।
0 comments:
Post a Comment