আজকের শিশুরা মোবাইল ফোন এবং ট্যাবলেটের ব্যাপক ব্যবহারে অভ্যস্থ হয়ে পড়েছে। একজন শিশু যখন মোবাইলের স্ক্রিনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রীল ভিডিও দেখে, তখন তার মনোযোগ এবং কল্পনাশক্তির বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। শিশুরা ঐতিহ্যগতভাবে ২০ মিনিটের কার্টুন বা গল্পের মাধ্যমে সম্মিলিত সাহিত্য এবং সামাজিক শিক্ষার মধ্যে বড়ো হতো। কিন্তু এখন, আটকা পড়ে আছে ছোট ছোট ভিডিওর জগতে।
স্বাস্থ্যকর চিন্তার অভাব
মোবাইলের স্ক্রীনে যে ভিডিওগুলো শিশু দেখছে, তা প্রায়শই বিনোদনের স্বল্পতা এবং অসমর্থনদায়ক ক্রিয়াকলাপের দিকে পরিচালিত করে। এতে তার মস্তিষ্কের জন্য কোনও স্বাস্থ্যকর চিন্তার জগৎ তৈরি হয় না। অভিভাবকদের উচিত শিশুদের বিগত সময়ের সংস্পর্শে নিয়ে আসা এবং নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ শেখানো।
বই পড়ার গুরুত্ব
আপনার শিশুর হাত থেকে মোবাইলটি তুলে উপযুক্ত বই দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। হয়তো তাকে এখনই পড়তে বলা হবে না, কিন্তু তাকে বইয়ের প্রতি আগ্রহী করতে হবে। পড়াশোনা মানসিক বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বই পড়ে মনকে খোলে, কল্পনা শক্তি বাড়ায় এবং শেখার প্রক্রিয়া উন্নত করে।
সৃজনশীলতার বিকাশ
যদি বই না দেন, কমপক্ষে সাদা কাগজ এবং রঙ পেন্সিল দিন। ছবি আঁকা এবং সৃজনশীল কাজ শিশুদের কল্পনাকে উৎকর্ষিত করে এবং তাদের ভাবনাপ্রেক্ষিতকে মিশ্রিত করে। অথবা ব্লক, মডেলিং ক্লে বা অন্যান্য সৃজনশীল খেলনা দিয়ে তাদের হাতে কিছু তৈরি করার সুযোগ দিন।
সামাজিক মেলামেশার প্রয়োজন
মোবাইলের মাধ্যমে শিশুদের মানসিক বিকাশের স্থানে তারা দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। শিশুদের মধ্যে সামাজিক ও মানসিক দক্ষতা বিকাশ হলে তাদের ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হবে। সুতরাং, কিছু সময় বের করে তাদের সাথে মেলামেশা করুন—কথা বলুন, খেলুন এবং তাদেরকে আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন।
ভবিষ্যতের জন্য সতর্কতা
আমার কিছু পরামর্শ হয়তো বিরক্তিকর মনে হতে পারে, কিন্তু কিছু দিন আগে চার বছরের কন্যার কথা ভাবুন, যে আয়নার সামনে “মা, আমাকে চেক্সি লাগছে” বলছে। এ ধরনের আচরণ ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে।
আমাদের সন্তানের সঠিক বিকাশের জন্য যদি আমরা সতর্ক না হই, তবে তা কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে। আসুন, আমরা সকলে একসাথে কাজ করি আমাদের ছোটদের সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য, তাদের ভবিষ্যতের সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে। 🛡️
0 comments:
Post a Comment