গতকাল বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ঘটনাটি ঘটে। প্রকৌশলী সোলাইমান একটি কারখানার পাওয়ার প্ল্যান্টে কাজ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ শেষে ফিরতে গিয়ে একটি রডবোঝাই লরি পেছন থেকে তাঁকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু ঘটে, এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ লাশ উদ্ধার করে রাতের মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
সোলাইমানের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর বাবা জহুর আহমেদ ছেলের অপেক্ষায় বাড়ির সামনের খুঁটিতে ভর দিয়ে সারা রাত কাটিয়েছেন। তিনি হয়তো ভেবেছিলেন প্রিয় সন্তানটি ফিরে আসবে। “আমি ছেলে আসবে বলেই দাঁড়িয়ে আছি,”—বিষণ্ন মুখের দিকে তাকালে বুঝা যায় হারিয়েছেন সব আশার আলো।
জহুর আহমেদের তিন ছেলের মধ্যে সোলাইমান ছিলেন সবচেয়ে ছোট। বড় দুই ছেলেকে অর্থের অভাবে সঠিক শিক্ষায় প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব হয়নি, কিন্তু সোলাইমানকে তিনি শক্ত হাতে বেড়ে উঠতে সাহায্য করেছিলেন। “আমি নিজেই একটি স-মিলে কাজ করে ছেলেদের বড় করেছি,”—বলেছিলেন জহুর। সোলাইমান ছিল একসময় তাঁর সব মেধা ও আশা।
জহুরের আশা ছিল, এই এক পুত্র অন্তত তাদের জীবনের কষ্টের সমাপ্তি ঘটাবে। ছেলে পড়াশোনা শেষ করে চাকরি পেয়েছিল, কিন্তু সে সচ্ছলতার রূপ দেখার আগেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেল।
মো. সোলাইমানের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে জীবনের অনিশ্চয়তা কতোখানি, এবং বাবার স্বপ্ন এবং সন্তানদের ভবিষ্যৎ বিনষ্ট করতে পারে একটি ক্ষণস্থায়ী মুহূর্ত।
0 comments:
Post a Comment