Thursday, May 1, 2025

রসে টইটম্বুর পাহাড়ি আনারস: সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত

শেরপুরের গারো পাহাড়ে কৃষিতে খুলেছে সম্ভাবনার নতুন এক দরজা—আনারস চাষ। বন্য হাতির আক্রমণে ধানসহ অন্যান্য ফসল বারবার নষ্ট হওয়ায় বিকল্প খুঁজতে কৃষকরা এখন ঝুঁকছেন জলডুবি জাতের আনারসের দিকে। রসালো ও সুস্বাদু এই আনারস স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন জেলাতেও।


রসে টইটম্বুর পাহাড়ি আনারস: সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত

ঝিনাইগাতী উপজেলার পশ্চিম বাকাকুড়া গ্রামের কৃষক জমশন ম্রং জানান, চট্টগ্রাম থেকে এনে তিনি ২০ হাজার আনারসের চারা রোপণ করেছেন, যাতে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আশাবাদী, এবার দ্বিগুণ লাভ হবে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে আনারস চাষ করবেন।

একই এলাকার কৃষি উদ্যোক্তা আশরাফুল আলম জানান, তিনি আট একর জমিতে দ্বিতীয় বারের মতো আনারসের আবাদ করছেন। এবার দুই লাখ চারা রোপণে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১৬ লাখ টাকা। তিনি বলেন, "ধান বা অন্যান্য ফসল হাতির আক্রমণে নষ্ট হলেও আনারস তুলনামূলকভাবে নিরাপদ ও বেশি লাভজনক। গতবারের মতো এবারও ভালো মুনাফার আশা করছি।"

চাষি সুব্রত জানান, তিনি গত দুই বছর ধরে জলডুবি জাতের আনারস চাষ করছেন। আগেরবার দারুণ ফলন পেয়েছেন, এবারও একই সাফল্যের প্রত্যাশা করছেন। আনারস চাষের কারণে কৃষকের পাশাপাশি অনেক শ্রমিকেরও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যা এই পাহাড়ি এলাকায় নতুন করে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে এনেছে।

শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মুহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন জানান, গারো পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া আনারস চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। ঝিনাইগাতীর সাফল্য দেখে এখন নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদীতেও এই চাষ ছড়িয়ে পড়ছে। তিনি আরও বলেন, "সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ানো এবং বন্য হাতির আক্রমণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া গেলে শেরপুর অঞ্চল খুব দ্রুত দেশের অন্যতম প্রধান আনারস উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হবে।"

0 comments:

Post a Comment

Popular News

Categories