ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে গিয়ে কি নিজেদের অর্থনীতিতে আঘাত হানল বাংলাদেশ? ভারত থেকে সুতো আমদানি বন্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের ফলে শিল্পমহলে এমনই প্রশ্ন উঠেছে। তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা এই পদক্ষেপকে ‘আত্মঘাতী’ বলেই চিহ্নিত করছেন।
বাংলাদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্তে ভারত থেকে স্থলপথে সুতো আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, ফলে গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত পয়েন্ট যেমন বেনাপোল, ভোমরা, সোনা মসজিদ, বাংলাবন্ধ এবং বুড়িমারী দিয়ে আর সুতো আমদানি সম্ভব নয়।
পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্টরা সতর্ক করেছেন, এই সিদ্ধান্ত দেশের মূল রপ্তানি খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেআইএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, “এই নিষেধাজ্ঞার ফলে পোশাক প্রস্তুতকারকদের খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাবে, যা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করবে।”
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প প্রায় ৯৫% সুতো আমদানির জন্য ভারতের ওপর নির্ভরশীল। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ ভারত থেকে ১২.৫ লাখ মেট্রিক টন সুতো আমদানি করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৩১.৫% বেশি।
একই সঙ্গে, ভারত বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে, যার ফলে নেপাল এবং ভুটানের মতো দেশগুলোতে পণ্য পরিবহনের সুযোগ হারাচ্ছে ঢাকা। ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ভারতীয় সীমান্ত থেকে একাধিক বাংলাদেশি ট্রাক ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অনেকে মনে করছেন, চীনে গিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর বক্তব্য রাখার পর ہی ভারত এই পদক্ষেপ নিয়েছে। তার পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে বাংলাদেশের সুতো আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেশের অর্থনীতিকে বিপাকে ফেলতে পারে বলেই মনে হচ্ছে।
বর্তমান পরিস্থিতি উপলব্ধি করে অনেকেই মন্তব্য করেছেন, ভারতের বিরুদ্ধে ‘প্রতিশোধ’ নিতে গিয়ে বাংলাদেশ যেন নিজেকে বিপদে ফেলছে।
0 comments:
Post a Comment