ভস্ম থেকে ফিনিক্স: বেন অ্যাফ্লেকের গল্প
সময়টা তখন কঠিন। হলিউডের সবচেয়ে প্রতিশ্রুতিশীল তারকা, পর্দার এক আলোচিত মুখ, বেন অ্যাফ্লেক—হঠাৎ করেই জীবনের সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়ে ঢুকে পড়েন। তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন 'ব্যাটম্যান' মুভিতে অভিনয়ের প্রস্তাব। কারণটা শুধুই পেশাগত নয়, তার বাইরেও চলছিল ভয়ঙ্কর ঝড়।
স্ত্রী তাঁর জীবন থেকে চলে গেলেন। সন্তানদের একটিবার দেখার সুযোগও পেলেন না। হৃদয়ের একান্ত চাওয়া, স্বপ্ন, ভালোবাসা—সব ছিন্নভিন্ন হয়ে ছড়িয়ে গেল চারদিকে। সেই ভাঙাচোরা আত্মায় বাসা বাঁধলো হতাশা, বিষণ্নতা আর নিঃসঙ্গতা।
দিনের পর দিন, রাতের পর রাত—মদে ডুবে থাকতেন বেন। আশেপাশের সবাই যেন ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছিলো। সমালোচনার ঢেউ আছড়ে পড়ছিলো বারবার। অপমান আর ব্যর্থতার ঘূর্ণিতে তিনি যেন ডুবে যাচ্ছিলেন এক অতল গভীরতায়। হাসপাতালের বিছানায় পড়ে ছিলেন একসময়—ভাঙা শরীর, ভেঙে পড়া আত্মা নিয়ে।
এরপর এক ভয়ানক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। চারদিক থেকে যখন সব আলো নিভে গিয়েছিল, ঠিক তখনই শুরু হলো তাঁর পুনর্জন্ম।
১৭ বছর পরে, জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিলেন এক নারী—জেনিফার লোপেজ। তাঁর শৈল্পিক আত্মা ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসা যেন বেনের ভিতরের আলোকে জ্বালিয়ে দিল নতুন করে। বেন নিজেই বলেছিলেন,
“জেনিফার আমাকে ভালোবাসতে শিখিয়েছে, নিজেকে ক্ষমা করতে শিখিয়েছে।”
আজ, বেন অ্যাফ্লেক শুধু একজন অভিনেতাই নন—তিনি একজন চিত্রনাট্যকার, একজন দক্ষ পরিচালক, ডিজনির অংশ, এবং অবশেষে, আবারো ব্যাটম্যান।
একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন বেন, আত্মবিশ্বাসে পূর্ণ। মঞ্চের একপাশে দাঁড়িয়ে আছেন জেনিফার—নিরবে, দর্শকদের দৃষ্টির আড়ালে, কিন্তু বেনের হৃদয়ের ঠিক মাঝখানে। তাঁর চোখে যেন জ্বলজ্বল করছে গর্ব, ভালোবাসা, আর অটুট বিশ্বাস।
এই গল্প শুধু বেন অ্যাফ্লেকের নয়। এটি সেইসব মানুষের, যারা জীবনের অন্ধকার সময়ে ভেঙে পড়েও আবার উঠে দাঁড়ায়—যারা অপেক্ষা করে একজন অনুপ্রেরণার, একটি ভালোবাসার, একটি নতুন সূর্যের।
কারণ, হ্যাঁ—পুনরায় শুরু করার দিনটি কখনোই খুব দূরে নয়।
It is never late to restart.
তথ্যসূত্র: অন্তর্জাল
0 comments:
Post a Comment