প্রাণ-এর উদ্যোগে মৌসুমি আম সংগ্রহে নতুন মাইলফলক
দেশের শীর্ষ কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান প্রাণ গ্রুপ এবারও আম সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বিশাল উদ্যোগ নিয়েছে। চলতি মৌসুমে তারা ৬০ হাজার মেট্রিক টন আম সংগ্রহের পরিকল্পনা করেছে, যা থেকে তৈরি হবে ম্যাংগো ড্রিংক, জুস, ম্যাংগো বারসহ নানা পণ্য। এই উদ্যোগ শুধুমাত্র ভোক্তাদের মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহের দিকেই নয়, কৃষক-ভিত্তিক একটি টেকসই চেইন গড়তেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

রাজশাহীর গোদাগাড়ি বরেন্দ্র ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে আম সংগ্রহ ও পাল্পিং কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন প্রাণ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াছ মৃধা। এই কার্যক্রমের আওতায় রাজশাহী ও নাটোরে অবস্থিত কারখানাগুলোতে আম সংগ্রহ এবং পাল্পিং কাজ পরিচালিত হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১২ হাজার চুক্তিভিত্তিক আম চাষির কাছ থেকে আম সংগ্রহ করা হবে। নাটোর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, দিনাজপুর, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও সাতক্ষীরা—এই জেলাগুলো প্রাণ-এর আম সংগ্রহের মূল কেন্দ্র।
সেরা মানের পাল্প পেতে প্রতিষ্ঠানটি গুটি ও আশ্বিনা জাতের আম বেছে নিচ্ছে। কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তার মাধ্যমে উৎপাদনের মানও বাড়ানো হয়েছে। এই সহায়তার ফলে এসব অঞ্চলে গুটি ও আশ্বিনা জাতের আমের চাষ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
আম সংগ্রহের পর একাধিক ধাপে তা প্রক্রিয়াজাত করা হয়। পাকা, পোকামুক্ত ও নিরাপদ আম বাছাই করে তা ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। এরপর স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির সাহায্যে পাল্প তৈরি করে অ্যাসেপটিক ব্যাগে করে কোল্ড স্টোরেজে সংরক্ষণ করা হয়।
এই পাল্প পরবর্তী সময়ে প্রাণ-এর নিজস্ব কারখানায় নিয়ে গিয়ে তৈরি হয় ম্যাংগো ফ্রুট ড্রিংক ও জুস। সবকিছুই হয় সম্পূর্ণ অটোমেটেড এবং স্পর্শবিহীন প্রযুক্তিতে। প্রাণ-এর এই পণ্য বর্তমানে বিশ্বের ১৪৫টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে, যা বাংলাদেশের রপ্তানি বাজারে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
ইলিয়াছ মৃধা বলেন, "মানসম্পন্ন কাঁচামালই উৎকৃষ্ট পণ্যের মূল ভিত্তি। তাই আমরা সরাসরি উৎপাদনের এলাকায় কারখানা স্থাপন করেছি যাতে কৃষকদের কাছ থেকে সহজেই আম সংগ্রহ করা যায়। এতে কৃষকরাও লাভবান হচ্ছেন।"
তিনি আরও জানান, শুরুতে গুটি আম এবং পরে আশ্বিনা আম দিয়ে পাল্প তৈরি হবে, এবং এই কার্যক্রম আমের সরবরাহ থাকা পর্যন্ত চলবে।
বাংলাদেশের ফ্রুট ড্রিংক ও জুস বাজার বর্তমানে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকার, এবং প্রতিবছর তা ১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। প্রাণ-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্ভাবনী উদ্যোগই এই বাজারের প্রবৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা রাখছে।
0 comments:
Post a Comment