Thursday, August 7, 2025

পৃথিবীর অস্থিরতা: আমাদের প্রস্তুতি কতটা?

পৃথিবীর নীরব হুঙ্কার: আমরা কি শুনতে পাচ্ছি?

সম্প্রতি পৃথিবীর বুকে ঘটে যাওয়া একের পর এক আগ্নেয়গিরির জেগে ওঠা, ভূমিকম্পের ঘনঘটা ও অস্থির ভৌগোলিক গতিপ্রকৃতি আমাদের সামনে বড় এক প্রশ্ন তুলে ধরছে— প্রকৃতি কি কিছু বলতে চাইছে? আর আমরা কি সে ভাষা বুঝে নিজেদের প্রস্তুত করছি?

রাশিয়ার ক্লুচেভস্কয় হঠাৎ অগ্ন্যুৎপাত শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মাউন্ট রেনিয়ারে ভূগর্ভে নড়াচড়া বেড়েছে। আলাস্কার আগ্নেয়গিরি স্পার এবং গ্রেট সিটকিন আবার জেগে উঠেছে। জাপানের সাকুরাজিমা, ইন্দোনেশিয়ার লেওটোবি ও মেরাপি এবং মেক্সিকোর পোপোক্যাটেপেটল — যেন সারাবিশ্বে একযোগে ভূমিক্ষরণ ও আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ ঘটছে।

এগুলো কি নিছক আলাদা আলাদা ঘটনা? নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে কোনো বড় প্রাকৃতিক বার্তা? ভূবিজ্ঞানীরা আজ এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন। কারণ, এই ঘটনাগুলোর মাত্রা, সময়কাল ও বিস্তৃতি কাকতালীয় বলে মনে হচ্ছে না আর।

আমরা ভুলে যাই, পৃথিবী একটি জীবন্ত গ্রহ। এর ভূগর্ভে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন চলছে, আর প্রতিটি পরিবর্তন আমাদের ওপরও প্রভাব ফেলছে — কখনও সরাসরি, কখনও পরোক্ষভাবে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, এটি একটি সতর্কবার্তা

এই ধারাবাহিক অস্থিরতা শুধুই ধ্বংস নয়, বরং একটি হুঁশিয়ারি — প্রকৃতি তার ভারসাম্য পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে। আর আমরা, যারা এই প্রকৃতির অংশ, সেই পরিবর্তনের জন্য কতটা প্রস্তুত?

প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় আমরা মহাকাশে পাড়ি দিতে সক্ষম হয়েছি, অথচ নিজের পায়ের নিচে জমে থাকা আগ্নেয় বিপদের পূর্বাভাস এখনও পর্যাপ্তভাবে নিতে পারছি না। শুধু উন্নয়ন নয়, আমাদের প্রয়োজন পরিবেশ-সচেতন পরিকল্পনা, দুর্যোগ প্রস্তুতি ও প্রকৃতির সংকেতকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা।

মানবতা বনাম প্রকৃতি নয় — এটি সহাবস্থানের লড়াই

প্রতিটি ভূমিকম্প, প্রতিটি আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত আমাদের মনে করিয়ে দেয় — আমরা প্রকৃতির নিয়ন্ত্রক নই, বরং সহযাত্রী। তাই নিজেদের রক্ষার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো প্রকৃতির ভাষা শেখা, তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং আগেভাগেই প্রস্তুত হওয়া।

যদি আমরা চোখ-কান খোলা রাখি, তাহলে বুঝতে পারব — পৃথিবীর প্রতিটি নড়াচড়া আসলে একটি বার্তা। সেই বার্তা হলো: "আমি বদলে যাচ্ছি, তুমি কি প্রস্তুত?"


সম্পাদকীয় মন্তব্য:
আজকের বার্তা শুধু বিজ্ঞানমনস্কদের জন্য নয়, বরং প্রত্যেক সচেতন নাগরিকের জন্য। ভবিষ্যতের পৃথিবী গড়তে হলে বর্তমানের সংকেতকে বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এখনই।
সক্রিয় আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণ
আগ্নেয়গিরি অগ্ন্যুৎপাত, ভূমিকম্প সতর্কতা, পৃথিবীর পরিবর্তন, ভূগর্ভ নড়াচড়া, সাকুরাজিমা, মেরাপি আগ্নেয়গিরি, ভূমিকম্প কারণ, ভূবিজ্ঞান, দুর্যোগ প্রস্তুতি পরিকল্পনা, আগ্নেয় বিপদ বার্তা, রাশিয়া আগ্নেয়গিরি, জাপান ভূকম্পন, ইন্দোনেশিয়া আগ্নেয়গিরি, বিজ্ঞানমনস্ক সচেতনতা

Tuesday, August 5, 2025

বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ খাদ্য সংকটগ্রস্ত দেশ

বিশ্বে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় চতুর্থ বাংলাদেশ

🕘 প্রকাশ: ৪ আগস্ট ২০২৫, ০৪:০০ পিএম | 

বিশ্বে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় চতুর্থ বাংলাদেশ

জাতিসংঘের পাঁচটি শীর্ষ সংস্থার যৌথ প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে বিশ্বের তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীন দেশের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রাখা হয়েছে। 'গ্লোবাল রিপোর্ট অন ফুড ক্রাইসিস ২০২৫'-এ বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রায় ৭ কোটি ৭১ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পাচ্ছেন না।

খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা বলতে বোঝানো হয়েছে ব্যক্তি বা পরিবারের পর্যায়ে অর্থ বা অন্যান্য সম্পদের অভাবে পর্যাপ্ত ও সুষম খাদ্যপ্রাপ্তির সীমিত সুযোগকে।

তীব্র খাদ্য সংকটে থাকা শীর্ষ পাঁচ দেশ হলোঃ নাইজেরিয়া, সুদান, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, বাংলাদেশ এবং ইথিওপিয়া। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে খাদ্য ঘাটতিতে পাকিস্তান (৬০%) এগিয়ে থাকলেও বাংলাদেশেও তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক (৪৪%)।

দক্ষিণ এশিয়ার তুলনামূলক চিত্র:

  • বাংলাদেশ: ৪৪%
  • পাকিস্তান: ৬০%
  • ভারত: ৪০%
  • নেপাল: ২০%
  • মালদ্বীপ: ১%

অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, "সরকার সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখলেও ব্যক্তিপর্যায়ে ‘চাপা ক্ষুধা’ বিদ্যমান। মানুষ বাধ্য হয়ে কম খাচ্ছে।"

কৃষি অর্থনীতিবিদ এম এ সাত্তার মন্ডল বলেন, "খাদ্য উৎপাদন বাড়লেও দুর্বল বণ্টন ব্যবস্থার কারণে তা সবার কাছে পৌঁছায় না। ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা ও সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি আরও জোরদার করা জরুরি।"

তবে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিট (FPMU) বলছে, দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ আছে। তবে তারা জাতিসংঘের মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

FPMU-এর মহাপরিচালক মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, “স্বাস্থ্যসম্মত খাবার সবার কাছে পৌঁছায় কি না, সেটাই আসল প্রশ্ন।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশে এখন খাদ্যের প্রাপ্যতা নয়, বরং যথাযথ বণ্টন ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্রয়ক্ষমতাই প্রধান চ্যালেঞ্জ।


Bangladesh food crisis 2025, খাদ্য সংকট বাংলাদেশ, জাতিসংঘ রিপোর্ট ২০২৫, FAO Bangladesh Food Security, Bangladesh malnutrition report, South Asia food comparison, Bangladesh hunger problem, চাপা ক্ষুধা বাংলাদেশ, খাদ্য মন্ত্রণালয় রিপোর্ট, খাদ্য নিরাপত্তা বিশ্লেষণ, Bangladeshi history books, ইতিহাসে খাদ্য সংকট

Saturday, August 2, 2025

শুল্ক ছাড়ের বিনিময়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব সংকটে: যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ও চুক্তির প্রভাব

শুল্ক ছাড়ের বিনিময়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব সংকটে


বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সাম্প্রতিক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা দেশের মধ্যে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ও শর্ত মানিয়ে শুল্ক কমানোর বিনিময়ে বাংলাদেশকে একাধিক কঠোর শর্ত মেনে নিতে হয়েছে। এসব শর্ত দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার ওপর গভীর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশকে চীনা সামরিক প্রযুক্তি বর্জন করে মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম কেনার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে মার্কিন বোয়িং বিমান ও যন্ত্রাংশ ক্রয়ে সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। এলএনজি ও খাদ্যপণ্য আমদানিতে মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য বিশেষ বাজার নিশ্চিত করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি ও লজিস্টিক খাতে মার্কিন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার শর্ত রয়েছে। এছাড়াও, মার্কিন আইন ও নজরদারি ব্যবস্থাও বাংলাদেশে প্রবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, “ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে স্বাক্ষরিত এই চুক্তি দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি আঘাত। এতে বাংলাদেশ তার স্বাধীন নীতি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে।” অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, “শুল্ক ছাড়ের নামে মার্কিন পণ্যের বাজারে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ, যা অর্থনৈতিক স্বাধীনতার জন্য সংকটজনক।”

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এই চুক্তি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। অনেকেই এটিকে দেশের স্বার্থের সঙ্গে আপস এবং সার্বভৌমত্ব বিক্রির সমতুল্য মনে করছেন।

বিশ্লেষকরা সরকারকে এই চুক্তির বিস্তারিত প্রকাশ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছেন। তারা বলছেন, “জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় এই চুক্তির সকল শর্তের জনসাধারণের সামনে পুরোপুরি তথ্য উপস্থাপন করা আবশ্যক।”

শুল্ক ছাড়, বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ, বাণিজ্য চুক্তি, মার্কিন শর্ত, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, ড. মুহাম্মদ ইউনূস, চীনা সামরিক প্রযুক্তি বর্জন, মার্কিন সামরিক সরঞ্জাম, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য

প্রাগৈতিহাসিক কৃমির পুনরুজ্জীবন: বিজ্ঞান ও প্রকৃতির বিস্ময়

প্রাগৈতিহাসিক কৃমি, পারমাফ্রস্ট আবিষ্কার, পুনরুজ্জীবিত কৃমি, সাইবেরিয়ার কৃমি, নেমাটোড প্রজাতি, হাজার বছরের কৃমি, হিমায়িত প্রাণী, মহাকাশ জীববিজ্ঞান, এক্সোপ্ল্যানেটারি জীবন, মঙ্গলে জীবন, ইউরোপার প্রাণী, প্রাচীন জীববৈচিত্র্য, বিজ্ঞান ও প্রকৃতি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণা, পরিবেশ রক্ষা

প্রাগৈতিহাসিক কৃমির পুনরুজ্জীবন: প্রকৃতি ও বিজ্ঞানের এক অবিশ্বাস্য বিস্ময়

প্রাগৈতিহাসিক কৃমির পুনরুজ্জীবন: প্রকৃতি ও বিজ্ঞানের এক অবিশ্বাস্য বিস্ময়

রাশিয়ান বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক আবিষ্কার বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীদের মুগ্ধ করেছে। সাইবেরিয়ার পারমাফ্রস্ট থেকে প্রায় ৩০০টি প্রাগৈতিহাসিক কৃমি উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে দুটিকে সফলভাবে পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব হয়েছে। হাজার হাজার বছর ধরে বরফে আটকা থাকা এই ক্ষুদ্র প্রাণীগুলো গলানোর সঙ্গে সঙ্গেই নড়াচড়া শুরু করে এবং খাদ্য গ্রহণ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, এদের বয়স প্রায় ৩২,০০০ থেকে ৪১,৭০০ বছর।

এই আবিষ্কার প্রমাণ করে যে কিছু জীব অত্যন্ত দীর্ঘ সময় পর্যন্ত হিমায়িত অবস্থায় টিকে থাকতে সক্ষম এবং পরে পুনরায় সক্রিয় হতে পারে। নেমাটোড প্রজাতির এই কৃমিগুলো মাটির গভীরে বাস করে এবং অতীতের জলবায়ু ও পরিবেশ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, তাদের টিকে থাকার রহস্য তাদের দেহের বিশেষ জৈবিক গঠনে নিহিত, যা কোষের ক্ষতি রোধ করে।

এই গবেষণার গুরুত্ব শুধু প্রাণীবিদ্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। মহাকাশ বিজ্ঞান ও এক্সোপ্ল্যানেটারি জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রেও এটি নতুন প্রশ্ন ও সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। যদি এমন প্রাণী হাজার হাজার বছর ধরে বরফে আটকে থেকে পুনরুজ্জীবিত হতে পারে, তাহলে আমাদের সৌরজগতের অন্যান্য গ্রহ ও উপগ্রহেও জীবনের অস্তিত্ব থাকা কি অসম্ভব? মঙ্গল কিংবা ইউরোপার মতো স্থানগুলো এখন নতুন দৃষ্টিতে দেখা দরকার।

বিশ্বব্যাপী এই আবিষ্কার আমাদের শেখায় যে প্রকৃতি কতটা রহস্যময় এবং জীবন কতটা স্থায়ী হতে পারে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে আমরা এই রহস্যগুলো আরও জানব এবং ভবিষ্যতের জন্য নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচন করব।

আমাদের অবশ্যই এই ধরনের গবেষণাকে উৎসাহিত করতে হবে এবং পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতন হতে হবে, যেন আমরা পৃথিবীর এই বিস্ময়কর জীববৈচিত্র্যকে সংরক্ষণ করতে পারি।

মাইলস্টোন স্কুল ট্র্যাজেডি: রাষ্ট্রের ব্যর্থতা ঢাকতে জনগণকে দায়ী করার ভয়ঙ্কর চেষ্টা


মাইলস্টোন স্কুল ট্র্যাজেডি: শোকের সময় জনগণকে দায়ী করা এক দায়িত্বহীন দৃষ্টান্ত
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম

মাইলস্টোন স্কুলে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় অনেক শিশু প্রাণ হারিয়েছে। পুরো দেশ শোকাহত। এমন সময়ে জনগণের প্রতি সহানুভূতি জানানো ও দায় স্বীকারের পরিবর্তে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, “এই ঘটনার দায় প্রত্যেক নাগরিকের।”

এ বক্তব্য শুধু অমানবিকই নয়, এটি রাষ্ট্রীয় দায়িত্বহীনতারও প্রতিফলন। একজন সরকারি কর্মকর্তার কাছ থেকে জনগণ প্রত্যাশা করে সহানুভূতি, জবাবদিহিতা ও সমাধানের পথ দেখানো। কিন্তু এই বক্তব্য বরং জনগণকে দোষারোপ করার মাধ্যমে পুরো ব্যর্থতা তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা।

শিশুদের মৃত্যুর মতো একটি ঘটনায় যদি সরকার নিজেই দায় নিতে না চায় এবং বরং দোষ চাপাতে চায় সাধারণ নাগরিকদের ওপর, তাহলে এটি স্পষ্ট করে দেয়—রাষ্ট্র ও জনগণের মধ্যে একটি বড় ফাঁক তৈরি হয়েছে। নূরজাহান বেগমের বক্তব্য সেই বিভেদেরই এক নিষ্ঠুর উদাহরণ।

রাষ্ট্রের উচিত ব্যর্থতা স্বীকার করে ব্যবস্থা নেওয়া, তদন্ত করা, এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা। কিন্তু এখানে উল্টো দেখা যাচ্ছে—রাষ্ট্র জনগণের দিকেই আঙুল তুলছে।

এই মন্তব্য ইতিহাসে থাকবে একটি কলঙ্ক হিসেবে—যেখানে একটি শোকাবহ ঘটনার সময় একজন সরকারি উপদেষ্টা জনগণের দিকেই দোষ চাপিয়ে দেন। এটি শুধু প্রশাসনিক ঔদ্ধত্য নয়, এটি জাতির প্রতি অবজ্ঞার প্রতীক।

রাষ্ট্র কোনো প্রভু নয়, রাষ্ট্র জনগণের সেবক। যারা জনগণের করের টাকায় বেতন পান, তাঁদের কাজ হলো দায়িত্ব নেওয়া—not blame shifting. জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকলেই সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে উঠতে পারে।

এ দেশের মানুষ ভুলে যাবে না এই অবমাননাকর ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ। এই ঘটনাটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে—শুধু নীতিবোধ নয়, নেতৃত্বের মধ্যেও মানবতা থাকা জরুরি।

— সম্পাদকমণ্ডলী
Trending Flash News

মাইলস্টোন স্কুল ট্র্যাজেডি, শিশুদের মৃত্যু, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বিতর্ক, রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, বাংলাদেশের প্রশাসন, জনগণকে দায়ী করা, স্বাস্থ্য প্রশাসনের দায়িত্ব, সরকারি ব্যর্থতা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্ঘটনা, বাংলাদেশ শিশু মৃত্যু সংবাদ

Popular News

Categories